শ্রমিকের মুখ নয়, ইটের আঘাতে থেঁতলে গেছে দেশের আইনশৃঙ্খলা
সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড়ের সেই রেস্ট হাউজের পেছনের নির্জন জমিতে পড়ে ছিল একটি মৃতদেহ। মানুষের মতো না—একটা ছিন্নভিন্ন, বিকৃত মুখ। পুলিশের ভাষায়, মুখমণ্ডলে ‘ইটের আঘাত’। মানবিক ভাষায় বললে, ওটা ছিল প্রতিহিংসার ছাপ, অবহেলার ছাপ, রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্ক্রিয়তার নীরব সাক্ষ্য।
নিহতের নাম আরাফাত হোসেন, বয়স ৪০। হোটেল শ্রমিক ছিলেন। ফরিদপুর থেকে সিরাজগঞ্জে এসেছিলেন জীবনের খোঁজে, ফিরে গেলেন নামহীন একটা খবর হয়ে। হঠাৎ প্রশ্ন জাগে—এই মৃত্যুটা কি আসলেই ‘হঠাৎ’? নাকি এটা ছিল এক দীর্ঘ অব্যবস্থাপনার স্বাভাবিক পরিণতি?
এই দেশে যখন রাস্তায় হাঁটা মানুষ পর্যন্ত অনিরাপদ, তখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কী করছেন? একের পর এক গুম, খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি—আর তিনি ব্যস্ত মিডিয়া শোতে উঁচু গলায় আইনের শাসনের বুলি আওড়াতে। বাস্তবতা হলো, তার অধীনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন নরকে পরিণত হয়েছে। ‘জিরো টলারেন্স’ কথাটা এখন কেবল ব্যঙ্গ।
সড়কে রক্ত, মুখ থেঁতলানো শ্রমিকের লাশ, আতঙ্কে কাঁপা গরিবের ঘর—এটাই এখন বাস্তবতা। একে বলে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, প্রশাসনিক অবহেলা, আর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রাখা মোহাম্মদ ইউনুসের চূড়ান্ত ব্যর্থ নেতৃত্ব।
একটা গরিব শ্রমিক, যার নাম কেউ মনে রাখবে না, তার মৃত্যুর মধ্য দিয়েই ফুটে উঠেছে এই অ-সরকারের প্রকৃত রূপ। যারা দেশ চালাচ্ছেন, তাদের কাছে নাগরিকের জীবনের মূল্য নেই—থাকে না কখনোই। নইলে দিনে দুপুরে, জনবহুল জায়গায় এমন একটা লাশ পড়ে থাকে, আর সরকার দেখে না? জানতে চায় না? দায় নেয় না?
আরাফাতের রক্ত শুধু মাটিতে পড়েনি। সেটা পড়েছে রাষ্ট্রের বিবেকে, সরকারের মুখে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মসৃণ কোটের বুকপকেটে।
কিন্তু বিবেকহীনদের সামনে বিবেকের কথা বলার মানে হয় না।